Microsoft Office 2016 সফটওয়্যার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান মাইক্রোসফটের অফিস অ্যাপসের সবচেয়ে আপডেট ভার্সন গুলোর একটি। এটি অফিস ২০১৩ এর পরবর্তী সংস্করণ। এই সফটওয়্যারটি একই সাথে ডেস্কটপ, নোটবুক, ফোন ও ট্যাবলেটে সার্পোট করবে। মাইক্রোসফট ওয়ার্ড, এক্সেল এবং পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টটেশনের কাজও এই সফটওয়্যারটি দ্বারা করা যাবে। পাশাপাশি এই সফটওয়্যারটিতে টেল মি টুল ও ইমেজ রোটেশন নামে দুটি নতুন ফিচার যোগ করা হয়েছে। আপনি চাইলে সহজেই মাইক্রোসফট অফিস ২০১৬ এর প্রাক সংস্করণ ব্যবহার করতে পারেন। আর এ জন্য আপনাকে মাইক্রোসফট কানেক্ট ওয়েবসাইটে গিয়ে সাইন আপ করতে হবে। নিচে Microsoft Office 2016 সফটওয়্যারটি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
Microsoft Word 2016
গুগল ডক্সের কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে, সহযোগীতার জন্য যা অন্যান্য অফিস সফটওয়্যার গুলোর চেয়ে উল্লেখযোগ্য ভাবে ভালো। Microsoft Word 2016 এর সাথে এই বৈশিষ্ট্য গুলোর কিছু কিছু যোগ করা হয়েছে। অফিস ২০১৬ সফটওয়্যারটির মাধ্যমে ওয়েব ও ডেস্কটপ ওয়ার্ড অ্যাপ্লিকেশান উভয়টিই পাশাপাশি ভালো ভাবে কাজ করে। এই সফটওয়্যারটির সাথে স্কাইপ ভিডিও চ্যাটিং অপশন একীভূত করা হয়েছে।
ফলে আপনি আপনার টিমম্যাটদের সাথে ভিডিও চ্যাটিং এর মাধ্যমে একই সাথে কাজ করার পাশাপাশি কাজের মাত্রা সম্পর্কে জেনে নিতে পারবেন। একটি ডকুমেন্ট ওপেন করার পর শেয়ার বাটন চেপে আপনি সহজেই আপনার অনুমোদিত টিমম্যাট বা বন্ধুদের সাথে ভিডিও কলে যোগ দিতে পারবেন। আপনার ভিডিও কলটি আপনার বন্ধুর দ্বারা একসেপ্ট হওয়ার পর আপনি এটি মিনিমাইজ করে ওয়ার্ড ডকুমেন্টে দু জন দু জনের ফেইস দেখে কথা ও কাজ এক সাথে সম্পন্ন করতে পারবেন। তাছাড়া এই সফটওয়্যারটি ব্যবহারের মাধ্যমে আপনি আপনার বন্ধু বা টিমম্যাটদেরকে তাৎক্ষণিক ভাবে ম্যাসেজ বা ইমেইলও করতে পারবেন। তবে ভিডিও কলে আপনার বন্ধু বা টিমম্যাটদের সাথে যোগাযোগ করতে হলে তাদেরকে অবশ্যই অনলাইনে একটিভ থাকতে হবে।
Microsoft Office 2016 Outlook
Microsoft Office 2016 সফটওয়্যারটি ব্যবহারের মাধ্যমে একই ডকুমেন্ট একাধিক জন দেখতে ও এডিট করতে পারে। আর এই কাজটি অত্যন্ত সহজ। মূলত অফিস ওয়ার্ড, এক্সেল, পাওয়ারপয়েন্ট এই সব ডেস্কটপ অ্যাপ্লিকেশান গুলোর টুলবারের ডান পাশে একটি শেয়ার বাটন রাখা হয়েছে।
Microsoft জানে যে ক্লাউড ভিত্তিক ডকুমেন্ট গুলো ব্যবহারকারীরা তাদের সহকর্মীদেরকে ইমেইল করে থাকে এবং ইমেইল পাওয়ার পর সহকর্মীরা অনেক বার ডাউনলোড করলে ইডিট করার অনুমতি থাকে না। ফলে তারা ইডিট করতে পারে না। অনেক সময় এই ফাইল গুলো ওপেনই করা যায় না। অথবা ওপেন করা গেলেও ইডিট করা যায় না।
আউটলুক ২০১৬ তে আপনি যখন কোন ডকুমেন্ট যোগ করে ওয়ানড্রাইভ ফোল্ডারে সংরক্ষণ করবেন এবং এটি কাউকে ইমেইল করবেন তখন প্রাপক স্বয়ংক্রিয় ভাবে ফাইলটি ইডিট করার অনুমতি পাবেন। প্রাপক যদি আউটলুক ব্যবহার করে থাকেন তবে ডকুমেন্টটি একটি সংযুক্ত আইকন হিসেবে প্রদর্শিত হবে। যা ঐ ব্যক্তি সহজেই ওপেন করতে পারবেন।
Custom User Group
অফিস অ্যাপ্লিকেশান ব্যবহার করে এমন সংস্থায় যদি আপনি কর্মরত থাকেন এবং একটি নির্দিষ্ট প্রকল্পের সাথে জড়িত থাকেন তাহলে আপনাকে দুটি বিকল্পের যে কোন একটি বিকল্প গ্রহণ করতে হবে। আর সে জন্য তথ্য ও প্রযুক্তি বিভাগকে আপনার জন্য একটি গ্রুপ মেইলিং এড্রেস তৈরি করতে বলুন অথবা প্রতিটি মেইলে আপনাকে সংশ্লিষ্ট সঠিক মানুষদের মনে রাখতে হবে।
আউটলুক ২০১৬ তে কোন সংস্থায় কর্মরত ব্যবহারকারীরা নিজস্ব কাস্টমস গ্রুপ তৈরি করতে পারবে এবং নিজে নিজেই সেই গ্রুপের অন্যদেরকে আমন্ত্রণ করতে পারবে। আউটলুক উইন্ডোর বাম পাশে ইমেইল বক্সের নিচে আপনার গ্রুপের সদস্যদের তালিকা প্রদর্শিত হবে। গ্রুপ তৈরির পর আপনাকে আপনার সদস্যদের গ্রুপে যোগদানের জন্য আমন্ত্রণ জানাতে হবে। আর আমন্ত্রণ গ্রহণের পর চাইলে অন্য সদস্যরাও মানুষদেরকে গ্রুপে যুক্ত করতে পারবে।
New Excel Chart
মাইক্রোসফট এক্সেলে চারটি নতুন ধরনের চার্ট যুক্ত করেছে। যা আপনাকে তাজা ও আর্কষণীয় ভাবে তথ্য উপস্থাপনে সহায়তা করবে। এর মধ্যে সবচেয়ে কৌতুহলী চার্ট হলো ওয়াটারফল চার্ট। যা বেসলাইন বরাবর উপরে বা নিচে একটি উলম্ব বার প্রদর্শন করে। মাইক্রোসফট কতৃপক্ষ বলছে ওয়াটারফল আর্থিক তথ্যের জন্য ভালো।
অন্যান্য চার্ট গুলোর মধ্যে রয়েছে ট্রি ম্যাপ, বিভিন্ন আইটেমের কাল্পনিক মূল্যের চার্ট ও সানবার্ট চার্ট ইত্যাদি।
Office Theme
অফিস ২০১৩ এ বার ও রিবন গুলো অনমনীয় সাদা রঙের। যা একে অপরের থেকে আলাদা। কিন্তু অফিস ২০১৬ ব্যবহারের ফলে অনমনীয় সাদা থিম, গাঢ় ধূসর থিম কিংবা অন্য রঙিন থিম ডিফল্ট হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। অফিস ২০১৬ তে ওয়ার্ডের জন্য নীল, আউটলুকের জন্য হালকা নীল, এক্সেলের জন্য সবুজ ও পাওয়ার পয়েন্টের জন্য লাল রং রয়েছে।
Smart Lookup
আপনি যদি একটি ডকুমেন্ট দেখা বা ইডিট করার সময় যে শব্দ বা বাক্যটি শিখতে চান তা সহজেই দেখতে হলে হাইলাইট করতে পারেন। আর এ জন্য আপনাকে ডান বাটন ক্লিক করে স্মার্ট লুকআপ নির্বাচন করতে হবে। তারপর অ্যাপসের ডান পাশে উল্লেখিত বাক্যাংশটির কিছু নিবন্ধ ও ফটো দেখা যাবে। এটি ওয়ার্ড, এক্সেল ও আউটলুক সহ প্রায় সব অফিস অ্যাপ্লিকেশান গুলোতে কাজ করে। তাছাড়া এটি আপনি হাইলাইট করেননি এমন কিছু প্রেক্ষাপটও তৈরি করতে পারে।
আশা করি মাইক্রোসফট অফিস নিয়ে রিভিউ আপনাদের ভাল লেগেছে। আবারও পরবর্তী কোন নতুন ও লেটেস্ট প্রোডাক্ট নিয়ে নতুন লেখা নিয়ে ফিরে আসব। আমাদের সাথেই থাকবেন।
আপনাদের প্রশ্ন বা মতামত নিচের কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না। আপনাদের প্রশ্ন ও মতামতের গুরুত্ব সবসময় দিয়ে থাকি।
EmoticonEmoticon