ব্যাবসায় ভালো ভাবে করতে হলে কিছু বিষয় জানা খুব জরুরি। চাকরি থেকে ব্যবসা সম্পূর্ণ ভিন্ন একটি বিষয়। আপাতদৃষ্টিতে চাকরি থেকে ব্যবসাকে স্বাধীন ও আরামদায়ক পেশা বলেই মনে হয়। কিন্তু ব্যবসা সবার জন্য নয়। ব্যবসায়ীদের জীবনযাপন কয়েকটি কারণে চাকরিজীবীদের থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন। ব্যবসা শুরু করার আগে এ বিষয়গুলো সবারই জেনে নেয়া উচিত।
তাই পাঠকদের জন্য এবার ১০টি উপায় উপস্থাপন করছে অর্থসূচক। যেগুলো ব্যবহারে আপনি ব্যবসায় সফলতা পাবেন।
উদ্যোক্তা হিসেবে আপনি যখন কোনো কোম্পানির কাজে মিটিংয়ে যাচ্ছেন তখন আপনাকে মুখের ভাষার পাশাপাশি শারীরিক অঙ্গভঙ্গি প্রকাশ করতে হবে। যা আপনার বক্তব্য উপস্থাপনে বিশ্বাস ও সততা বাড়াবে। তবে এর অর্থ এই নয় যে আপনি মঞ্চে ওঠে অভিনয় করবেন। বরং অতিরিক্ত পরিমাণ আই কনট্যাক্ট আবার আক্রমণাত্মক ভাব প্রকাশ করতে পারে। তাই যতটুকু প্রয়োজন ততটুকুই আই কনট্যাক্ট করতে হবে। কথা বলার সময় কারও প্রতি অপলক নয়নে তাকিয়ে থেকে কথা বলা উচিত নয়। সব ধরনের দর্শক ও শ্রোতাদের প্রতি নজর দিতে হবে। তাহলে এদিক থেকে আপনার সফলতা আসবেই।
সূত্র ও ছবি: ইন্টারনেট – ক্যারিয়ার ডেস্ক
তাই পাঠকদের জন্য এবার ১০টি উপায় উপস্থাপন করছে অর্থসূচক। যেগুলো ব্যবহারে আপনি ব্যবসায় সফলতা পাবেন।
আই কনট্যাক্ট:
চোখের ভাষাউদ্যোক্তা হিসেবে আপনি যখন কোনো কোম্পানির কাজে মিটিংয়ে যাচ্ছেন তখন আপনাকে মুখের ভাষার পাশাপাশি শারীরিক অঙ্গভঙ্গি প্রকাশ করতে হবে। যা আপনার বক্তব্য উপস্থাপনে বিশ্বাস ও সততা বাড়াবে। তবে এর অর্থ এই নয় যে আপনি মঞ্চে ওঠে অভিনয় করবেন। বরং অতিরিক্ত পরিমাণ আই কনট্যাক্ট আবার আক্রমণাত্মক ভাব প্রকাশ করতে পারে। তাই যতটুকু প্রয়োজন ততটুকুই আই কনট্যাক্ট করতে হবে। কথা বলার সময় কারও প্রতি অপলক নয়নে তাকিয়ে থেকে কথা বলা উচিত নয়। সব ধরনের দর্শক ও শ্রোতাদের প্রতি নজর দিতে হবে। তাহলে এদিক থেকে আপনার সফলতা আসবেই।
ধ্যান করা:
ব্যবসায়িক উন্নতির জন্য প্রচুর পরিমাণে নিজেকে ধ্যানে মগ্ন রাখুন। ব্যবসায়িক কাজে তড়িঘড়ি করে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার দরকার নেই। মেডিটেশন পদ্ধতি ব্যবহার করে একটি বিষয় বহু ভেবে চিন্তে সিদ্ধান্ত নিন।কুশল বিনিময়ের ক্ষেত্রে সচেতন থাকুন:
ব্যবসায়িক সফলতা পেতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন যে জিনিসটা দরকার তা হলো- অন্যান্য ব্যবসায়িক কর্মকর্তাদের কুশল বিনিময়ের ক্ষেত্রে সচেতন থাকুন। যাতে তাদের মধ্যে আপনার সম্পর্কে কোনো ধরনের নেতিবাচক ধারণা জন্ম না নেয়। এজন্য হ্যান্ডশেক হতে পারে অন্যতম মাধ্যম। তবে এক্ষেত্রে সচেতন থাকতে হবে। কারণ এর মাধ্যমেই অন্যর সাথে পরিচয়টা বাড়ানো যায়।কাজের ক্ষেত্র বৃদ্ধি করুন:
প্রতিষ্ঠানে আপনি যে স্থানে অবস্থান করছেন। কেউ যদি সেই স্থানে আপনার কাজে সাহায্য করার নাম করে আপনাকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করে তবে আপনার অবস্থান হারাতে পারে। তাই এটিকে কখনই প্রশ্রয় দেবেন না। এটা না করে বরং তাদের সাহায্য নিয়ে আপনার কাজের ক্ষেত্র আপনিই প্রসার করুন। তাহলে দেখবেন সফলতা আসবে।প্রতিষ্ঠানে কখনও অস্থির হবেন না:
অস্থিরতা কাজের প্রধান অন্তরায়। তাই কর্মরত অবস্থায় আপনার অস্থিরতা এড়িয়ে চলুন। এটা আপনার কাজের পরিবেশকে নষ্ট করতে পারে। এছাড়া কখনও টেবিলে আঙ্গুল বাজাবেন না, বসের সামনে মাথার চুল আচড়াবেন না, কোনো দুশ্চিতা করবেন না। সবসময় আত্মবিশ্বাসী থাকুন, তবেই দেখবেন সফলতা আপনার কাছে ধরা দেবে।অতিরিক্ত হাসি বন্ধ করুন:
কর্মরত অবস্থায় আপনি হাসতেই পারেন। তবে সেটা যেন অন্যর বিরক্তির কারণ হয়ে না দাড়ায়। তাই হাসার আগে সেখানে নিজের অবস্থানটা তৈরি করে নিন। যাতে কোন অবস্থাতেই আপনার ওপর কেউ অখুশি না হয়।সবকিছুই পরিচালনা করুন আত্মবিশ্বাসের সাথে:
যে কোনো প্রতিষ্ঠানে কাজের ক্ষেত্রে আত্মবিশ্বাস একটি বড় জিনিস। যা আপনাকে কাজের শক্তি যোগায়। তাই সবকিছু পরিচালনার ক্ষেত্রে আত্মবিশ্বাসী থাকুন। যাতে এটা ছাড়া অন্য কেউ আপনার সম্পর্কে দ্বিতীয় মন্তব্য না করতে পারেন। এমনকি যদি রাগান্বিত থাকেন তারপরেই নিজেকে স্বাভাবিক রাখূন। কখনও উত্তেজিত হবেন না।নিজেকে সঠিকভাবে উপস্থাপন করুন:
যখন আপনি কারো সাথে যোগাযোগ করছেন তখন তার কাছ থেকে বেশি দুরে থাকবেন না বা অতিরিক্ত কাছে আসারও দরকার নাই। বাচনিক যোগাযোগের সাথে তার সাথে অবাচনিক যোগাযোগও রক্ষা করে চলুন। দেখবেন ওই কাজে আপনার সফলতা আসবে।মুখের অভিব্যক্তি নিয়ন্ত্রণ করুন:
কোনো স্থানে যদি কিছু উপস্থাপন করেন তবে সাধারণত মানুষ আপনার মুখের দিকেই তাকিয়ে থাকে। তাই যদি যোগাযোগ করার সময় কোনো কারনে আপনার মুখের অভিব্যক্তি খারাপভাবে প্রকাশ করেন। তবে তার দর্শক ও শ্রোতার সাথে যোগাযোগের ওপর্ও বর্তায়। ফলে ফলপ্রসূ যোগাযোগ ব্যর্থ হতে পারে। তাই সর্বদা হাস্যউজ্জ্বল থাকুন। মুখের অভিব্যক্তিকে নিয়ন্ত্রন করুন।যোগাযোগ করার সময় চোখ খোলা রাখুন
কারো সাথে যোগাযোগ করার সময় নিজের চোখ খোলা রাখুন। কারণ আপনার চোখের অভিব্যক্তি তার সাথে যোগাযোগকে ফলপ্রসূ করে। কখনই নিচু হয়ে বা নিচের দিকে তাকিয়ে কথা বলবেন না।আত্ম-নিয়মানুবর্তিতা
কর্পোরেট জগতে দশকব্যাপী থাকার পরেও নিজ উদ্যোগে নিয়মানুবর্তিতার মধ্যে চলার প্রয়োজনীয়তা শেষ হয় না। বিশেষ করে নিজের ব্যবসা যখন নিজেই চালাবেন তখন এ বিষয়টির গুরুত্ব অপরিসীম। অন্যথায় আপনি নিজেই নিজের ব্যবসা নষ্ট করতে পারেন। আর আত্ম-নিয়মানুবর্তিতায় যদি চলতে পারেন তাহলে ব্যবসা সফল হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়।খরচ হবে লাগামছাড়া
ব্যবসা শুরু মানে শুধু লাভ করা নয়। এ জন্য আপনাকে নানা ট্যাক্স দিতে হবে। রয়েছে নানা নিয়মিত খরচের ধাক্কা। এ ছাড়াও থাকবে অনাকাক্সিক্ষত নানা খরচ। এসব খরচ সামলানোর জন্য পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নিয়েই ব্যবসায় নামতে হবে। অন্যথায় আপনার উদ্যোগ মাঠে মারা যাবে।খাটতে হবে ক্রীতদাসের মতো
নিজের ব্যবসা মানে তার সবকিছুই আপনাকে দেখতে হবে। সেখানে আপনার পরিশ্রম ছাড়া এগোনো একেবারেই অসম্ভব। আর তাই নিজের ব্যবসায় আপনার পরিশ্রমের কোনো সীমা থাকবে নাÑ কয়দিন, কয় ঘণ্টা পরিশ্রম করলেন, তার হিসাব করা এখানে বৃথা। একজন ক্রীতদাসের মতোই আপনাকে পরিশ্রম করতে হবে।একাকী জীবন
শীর্ষপর্যায়ের ব্যক্তিদের আদতে একাকী জীবনযাপন করতে হয়। কলিগ, বন্ধু-বান্ধব ইত্যাদির স্বাদ এখানে পাওয়া যায় না। ব্যবসা সফল করার জন্য অনেকেই তাদের সর্বশক্তি নিয়োগ করেন। আর তা করতে গিয়েই অধিকাংশ মেধা ও প্রচেষ্টা ব্যয় হয়ে যায়। ফলে অন্য কাজের ফুরসত পাওয়া যায় না বললেই চলে।নিরাপত্তাজালের অভাব
চাকরির ক্ষেত্রে আপনার কিছুটা হলেও বেতনের একটা নিশ্চয়তা থাকে। কাজ করলে নিয়োগকর্তার কাছ থেকে আপনার একটা পারিশ্রমিক পাওনা হয়ে যায়। কিন্তু ব্যবসা ক্ষেত্রে এর কোনো নিশ্চয়তা নেই। আপনি কাজ করলেও সে জন্য যে অর্থ পাবেন এমন কোনো কথা নেই বরং এর বিপরীতটাও হতে পারে।ধারণার চেয়েও কঠিন
আপনার আগ্রহের বিষয় হতে পারে মার্কেটিং, অ্যাকাউন্টিং, ডিজাইনিং কিংবা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের কোনো একটি বিষয়। সে বিষয়টি নিয়ে আপনি ব্যবসা করতে চান। কিন্তু ব্যবসার জন্য শুধু সে বিষয়টি নিয়ে মাথা ঘামালেই হবে না। এ জন্য আপনার আরো বহু বিষয় মাথায় রাখতে হবে। কারণ আপনি এখানে সবকিছুর নিয়ন্ত্রক। প্রয়োজন অনুযায়ী দক্ষ মানুষকে আপনার বেছে নিয়ে সঠিক কাজের জন্য তাদের নিয়োগ করতে হবে। এরপর তাদের থেকে কাজ আদায় করে নেয়াও আপনার দায়িত্ব হবে।সবার সঙ্গে মানিয়ে চলতে হবে
ব্যবসার খাতিরে বহু অপ্রিয় বিষয়কেও আপনার হাসিমুখে মেনে নিতে হবে। আপনার ব্যবসা যখন ‘হাটি হাটি পা পা’ তখন আপনার চেষ্টা হবে যতভাবে সম্ভব গ্রাহক যোগাড় করা। আর এ জন্য আপনাকে যথাসম্ভব চেষ্টা করতে হবে। আর এ প্রচেষ্টার অন্যতম উপায় হতে পারে যথাসম্ভব পরিচিতি বাড়িয়ে চলা। এ জন্য আপনাকে ইচ্ছে না থাকলেও সবার সঙ্গে মানিয়ে চলতে হবে।ধন্যবাদহীন চাকরি
কোনো চাকরির ক্ষেত্রে কঠিন একটি কাজ করলে আপনি ধন্যবাদ পেতে পারেন। কিন্তু ব্যবসার ক্ষেত্রে এমনটা হবে না। এখানে আপনাকে ধন্যবাদ দেয়ার জন্য কেউ এগিয়ে আসবে না।কাজের বিকল্প নয়
কোনো একটি প্রতিষ্ঠানে অন্যের অধীনে নিয়োজিত থাকলে আপনার যেমন কাজ করতে হবে ব্যবসা ক্ষেত্রেও তার খুব একটা ব্যতিক্রম নয়। ব্যবসা মানে আপনি সারাক্ষণ কাজ না করে বসে থাকবেন, এমনটা ভাবার কোনো কারণ নেই। এটাও একটা কাজ।ব্যর্থতা আসতে পারে
ব্যবসা ক্ষেত্রে আপনার প্রাণপণ চেষ্টা যে সাফল্য আনবে, শতভাগ নিশ্চয়তা দিয়ে এমনটা বলা যায় না। ব্যবসা মানেই তাতে থাকতে পারে সাফল্য বা ব্যর্থতা। আর তাই ব্যবসায়ীরও সে অনুযায়ী প্রস্তুতি রাখতে হয়।সূত্র ও ছবি: ইন্টারনেট – ক্যারিয়ার ডেস্ক
EmoticonEmoticon