ক্যারিয়ার জন্য যে কাজগুলো গ্রাজুয়েশনের আগেই করা দরকার এ বিষয় আমাদের সবার জানা খুবই প্রয়োজন । গ্র্যাজুয়েট হওয়ার পর আমাদের মাথায় রাজ্যের টেনশান। যখনই কোনো কোম্পানিতে আবেদন করতে যাই, তখন ইন্টারভিউ দেয়ার পর মনে হয় ‘ইশ এই কাজটা যদি আগে করে রাখতাম, ঐ কাজটা যদি আগে জানতাম।এরকম প্রচুর আফসোস কাজ করে আমাদের মধ্যে। তার উপর আমাদের আরো বড় সমস্যা হলো কেউ যখন কোনো পরামর্শ দেয় সেসব আমরা শুনিনা।
পরামর্শমুলক কোনো বড় আর্টিকেল দেখলে বড় লেখা দেখে তা পড়িনা। তাহলে চাকরিদাতা কি আপনার শ্বশুর যে, ঘরে এসে আপনাকে এমনি এমনি চাকরি দিয়ে যাবে। তাই গ্র্যাজুয়েশনের আগেই ক্যারিয়ারের জন্য যে কাজগুলো করে রাখা দরকার তা Bangladesh Career Club এর মাধ্যমে আপনাদের জানাচ্ছেন একজন ক্যারিয়ার এক্সপার্ট ও ওয়েবডেভেলাপার।
ক্যারিয়ার জন্য যে কাজগুলো গ্রাজুয়েশনের আগেই করে রাখা দরকারঃ
১. নিজস্ব ইনকাম:
তুমি কোটিপতির সন্তান হলেও- স্টুডেন্ট লাইফে তোমাকে কিছু না, কিছু ইনকাম করতেই হবে। তাতে রেস্পন্সিবিলি কিভাবে নিতে হয়। কিভাবে অন্যকে সার্ভ করতে হয়। কাজ দিয়ে হ্যাপি রাখতে হয় সেটা শিখতে পারবে।
এই ইনকাম টিউশনি দিয়ে, কোচিং সেন্টারে ক্লাস নিয়ে, পার্টটাইম চাকরি দিয়ে হতে পারো। বন্ধুদের কাছে বা আশেপাশের মানুষের কাছে কিছু বিক্রি করে (হালের বিশ্বকাপ জার্সি) যেটাই হোক না কেন, বেশ কয়েকবার ইনকাম করার চেষ্টা তোমাকে করতেই হবে।
২. MS Excel:
তুমি ইঞ্জিনিয়ারিং/মেডিকেল/কিংবা হিস্ট্রি যে সাবজেক্টেই পড়ো না কেন। বেসিক Excel তোমাকে শিখতেই হবে। কিভাবে excel এ যোগ করে, এভারেজ বের করে। চার্ট বানায়, ফর্মুলা এপ্লাই করে, ডাটা ফিল্টার করে, ফর্মুলা বাদে ভ্যালু কপি-পেস্ট করে। একাধিক ওয়ার্কশীট থেকে ডাটার সামারি করে। সেটা তোমাকে জানতেই হবে। জাস্ট এক সপ্তাহ সময় দাও। নিজের কম্পিউটারে এক্সেল না থাকলে, গুগল ড্রাইভের গুগল শিট (sheet) এ কিভাবে করে শিখে ফেল।
৩. ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট:
বন্ধুদের ঘুরতে যাওয়া হোক কিংবা ক্যাম্পসে কোন ইভেন্ট হোক- সেটা ইফতার পার্টি, বৈশাখী মেলা, rag পার্টি, জব ফেয়ার, এলামনাই রিউনিয়ন। যেটাই হোক তোমাকে ইভেন্টের একজন মেইন অর্গানাইজার হতেই হবে। তাহলে তুমি বুঝতে পারবে কিভাবে বিভিন্ন ধরনের মানুষ হ্যাডেল করতে হয়। কিভাবে বাজেট করতে হয়। প্লানিং করতে হয়। মানুষের কাজ থেকে হেল্প আদায় করতে হয়। ১৫-২০ টা জিনিস একসাথে কম্বাইন করার প্রাকটিক্যাল ট্রেনিং ফ্রি ফ্রি আর কোথাও পাবা না।
৪. বেসিক ইংলিশ:
তুমি দেশের সেরা ভার্সিটি বা সবচেয়ে খারাপ কলেজের ডিগ্রি কোর্স পড়ো না কেন। ইংরেজি নরমাল কথা বার্তা চালিয়ে যাওয়ার যোগ্যতা অর্জন করতেই হবে। কোন একটা ইংরেজি পত্রিকা ধরে সেখানে কি নিয়ে নিউজ করছে সেটা বুঝার যোগ্যতা অর্জন করতেই হবে। নিজের সম্পর্কে বা দেশের সম্পর্কে এক বসায় দুই তিন পাতা ইংরেজিতে লেখার যোগ্যতা তৈরি করতে হবে। ইংরেজি শিখার জন্য ইউটিউবে প্রচুর ভিডিও আছে। ২ মাস ইংরেজি ভিডিও দেখে দেখে রুম বন্ধ করে ওদের কথার সাথে নিজে নিজে উচ্চারণ প্রাকটিস কর। দেখো তোমার ইংরেজি লেভেল কই থেকে কই চলে গেছে।
৫. এরিয়া অফ ইন্টারেস্ট:
তুমি যে সাবজেক্টেই পড়ো না কোন। যে ফিল্ডেই পড়ো না কেন। তোমাকে সেই ফিল্ডের যেকোন একটা এরিয়াতে তোমার টেক্সট বইয়ের/ ক্লাসের পড়ার বাইরে বেশি জানতে হবে। সেটার জন্য তুমি এক্সট্রা বই পড়তে পারো। গুগলে সার্চ দিয়ে আর্টিকেল বের করে পড়তে পারো। সেই ফিল্ডের ব্লগ বা রিসার্চ পেপার থাকলে সেগুলা জানতে হবে। নিজের ভিতরে কিউরিসিটি গ্রো করতেই হবে।
তারপর যা যা শিখছো সেগুলা একটা একটা করে সামারি লিখতে হবে। সেই সামারি কোথাও না কোথাও পাবলিশ করার চেষ্টা করবা। ডিপার্টমেন্টের ম্যাগাজিন। সেটাও না পারলে বিশ্বের সেরা পাবলিশার ফেইসবুকে পাবলিশ করে দিবা। দুই একজন বন্ধু টিটকারি মারলেও তুমি কী কী শিখছো সেটা ফেইসবুকে পোস্ট করে দিবা।
৬. বেস্ট ফ্রেন্ড:
তোমার একজন বেস্ট ফ্রেন্ড বানাতেই হবে। একটা ফ্রেন্ড সার্কেল থাকবে। তবে ফ্রেন্ড সার্কেলের মধ্যে বা বাইরে তোমার একজন বেস্ট ফ্রেন্ড থাকবেই। যার সাথে মিলে তুমি অনেক কিছু করবে। অনেক জায়গায় যাবে। দুজনের ইন্টারেস্ট লেভেল কাছাকাছি থাকবে। একজন আরেকজনকে হেল্প করবে। এই ক্লোজনেস তোমাকে ডাউন টাইমে হেল্প করবে। ফিউচার ঠিক করতে হেল্প করবে। কারণ সব বন্ধুর সাথে সব শেয়ার করা যায় না। বেস্ট বাডি না থাকলে- ইয়াং লাইফে নিজের ভিতরের ইমোশনাল অত্যাচারটা বড্ড রকমের বেশি হবে।
৭. নেটওয়ার্কিং:
তুমি যে ফিল্ডে কাজ করতে চাও। সেই ফিল্ডের কমপক্ষে দশজনের সাথে তোমার কানেকশন থাকতে হবে। তারা হতে পারে তোমার সিনিয়র। অন্য ভার্সিটির সিনিয়র বা অন্য কোথাও থেকে পাশ করা প্রফেশনাল হতে পারে। দেশের বাইরের কেউ হতে পারে। হয়তো কোন ওয়ার্কশপ বা সেমিনারে এ গিয়ে তাদের সাথে পরিচয় হইছে। তাদের সাথে তোমার যোগাযোগ থাকবে। তারা জানবে তুমি কোন কোন জিনিসে ভালো। তোমার প্যাশন কি। ফিউচার প্ল্যান নিয়ে তাদের সাথে ডিসকাস করবা। [ এ বিষয়ে বিস্তারিত লেখা আছে “জব পেতে কিভাবে নেটওয়ার্ক গড়বেন ” গতকালকের লেখাটা। ক্লাবের পেইজে দেয়া আছে।]
৮. বিল্ড ইউর রেজুমি:
চার বছর ভার্সিটি পড়ার পর যদি দেড় পাতা রেজুমি লেখার মেটেরিয়াল তোমার লাইফে না থাকে তাইলে তুমি করলা, নাবিলা? তোমাকে এক্সট্রা কারিকুলার এর সাথে জড়িত থাকতেই হবে। যেকোন একটা অর্গানাইজেশনের সাথে। সেরকম কোন অর্গানাইজেশন না থাকলে তুমি এবং তোমার বন্ধুরা মিলে একটা দিয়ে ফেলবে। সিনিয়র ভাইদের কাছ থেকে তাদের সিভি/রেজুমি জোগাড় করে ফেলবা।
দরকার না থাকলেও সেকেন্ড ইয়ারে/থার্ড ইয়ারে তোমার একটা রেজুমি বানিয়ে ফেলবে। bdjobs এ গিয়ে দুই একটা জব সার্কুলার দেখে ঠিক করবে তারা কী কী চায়। তাহলে বুঝতে পারবে কোন কোন জায়গায় গ্যাপ আছে। তখন সেই গ্যাপগুলার এরিয়াতে ইমপ্রুভ করে ফেলবে।
৯. MS Word/Powerpoint:
তুমি যেই লাইনেই পড়ো কেন। MS word এ কিভাবে রিপোর্ট ফরম্যাট দিতে হয় , অটোমেটিক টেবিল অফ কন্টেন্ট কিভাবে বানাতে হয়। ট্রেকিং চেইঞ্জ, রেফারেন্স এড করার বিষয়গুলো জানতে হবে। একইসাথে ভালো পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন বানানোর চেষ্টা করবে। তোমার ক্লাসে প্রেজেন্টেশন না থাকলে নিজেই নিজের জন্য বানিয়ে ফেলবে। how to make good powepoint presentation লিখে গুগলে সার্চ দিয়ে শিখার জন্য চেষ্টা করতে হবে।
১০. স্ট্রেজে উঠতে হবে:
স্টুডেন্ট লাইফে একবার না একবার তোমাকে স্টেজে উঠতেই হবে। মিনিমাম ৫০জন মানুষের সামনে। সেটা বক্তৃতা দিতে হোক। উপস্থাপনা দিতে হোক। বা নাচ, গান/নাটক কিছু পারফর্ম করতে হোক। তোমাকে পাবলিকের সামনে দাঁড়ানোর ভয় কাটানোর এর চেয়ে ভালো সুযোগ স্টুডেন্ট লাইফের বাইরে কোথাও পাবা না।
১১. এক্সটা নলেজ:
পাঠ্য বইয়ের বাইরের জগতে তোমাকে হানা দিতেই হবে। সেটা হতে পারে কিছু বিখ্যাত বই পড়ে (বাংলায় বা ইংরেজিতে)। উপন্যাস বা আত্ন উন্নয়নমূলক বা অন্য কোন ক্যাটাগরির বই। হতে পারে কিছু অস্কার বিজয়ী সিনেমা। মোস্ট পপুলার TED talks গুলা দেখলে। অন্য ডিপার্টমেন্টের ছেলেপুলেরা কী কী নিয়ে পড়তেছে সেটা নিয়ে মাঝে মধ্যে গল্প করলা।
তাইলে তুমি তোমার জগতের বাইরের কিছু জিনিস সম্পর্কে অবগত হলে। আর তার পাশাপাশি প্রোগ্রামিং ল্যাংগুজে কি জিনিস। কোন একটা প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ এর প্রাথমিক ধারণাগুলো নিয়ে রাখতে হবে।
১২) ব্যক্তিগত প্রিপারেশন:
তোমার একটা ব্যাংক একাউন্ট থাকতে হবে। টিউশনি করে হোক বা যেভাবেই হোক পাশ করার পর তিন-চার মাস চলার মতো টাকা তোমার ব্যাংকে থাকতে হবে। কারণ পাশ করার পরের দিনই সবাই চাকরি পেয়ে যাবে না। তোমাকে দুই জোড়া ফর্মাল ড্রেস কিনে রাখতে হবে। ইন্টারভিউ দিতে যাওয়ার সময় কাজে লাগবে।
মনে রাখবে- তোমার নিজেকেই নিজে গড়ে নিতে হবে। তোমার ভার্সিটি তোমাকে গড়ে দিবে না। শুধু একটা প্লাটফর্ম দিবে। সেই প্লাটফর্ম কাজে লাগানোর দায়িত্ব তোমার।
এই চেকলিস্ট ধরে ধরে এখন চেক করো- ১২ টা পয়েন্টের কোন কোন জায়গায় তোমার ঘাটতি আছে। সেগুলা ঠিক করার জন্য আজকে থেকেই কাজে নেমে পড়ো। তাহলে ছয় মাস বা এক বছর পরের তুমি, আজকের তুমির চাইতে অনেক বেশি আত্মপ্রত্যয়ী এবং যোগ্য হবে। সেটা দেখার অপেক্ষায় থাকলাম। আর অবশ্যই তোমার বন্ধুদের লেখাটা পড়তে দাও ম্যানশান করে।
লিখেছেনঃ ঝংকার মাহবুব
পরামর্শমুলক কোনো বড় আর্টিকেল দেখলে বড় লেখা দেখে তা পড়িনা। তাহলে চাকরিদাতা কি আপনার শ্বশুর যে, ঘরে এসে আপনাকে এমনি এমনি চাকরি দিয়ে যাবে। তাই গ্র্যাজুয়েশনের আগেই ক্যারিয়ারের জন্য যে কাজগুলো করে রাখা দরকার তা Bangladesh Career Club এর মাধ্যমে আপনাদের জানাচ্ছেন একজন ক্যারিয়ার এক্সপার্ট ও ওয়েবডেভেলাপার।
ক্যারিয়ার জন্য যে কাজগুলো গ্রাজুয়েশনের আগেই করে রাখা দরকারঃ
১. নিজস্ব ইনকাম:
তুমি কোটিপতির সন্তান হলেও- স্টুডেন্ট লাইফে তোমাকে কিছু না, কিছু ইনকাম করতেই হবে। তাতে রেস্পন্সিবিলি কিভাবে নিতে হয়। কিভাবে অন্যকে সার্ভ করতে হয়। কাজ দিয়ে হ্যাপি রাখতে হয় সেটা শিখতে পারবে।
এই ইনকাম টিউশনি দিয়ে, কোচিং সেন্টারে ক্লাস নিয়ে, পার্টটাইম চাকরি দিয়ে হতে পারো। বন্ধুদের কাছে বা আশেপাশের মানুষের কাছে কিছু বিক্রি করে (হালের বিশ্বকাপ জার্সি) যেটাই হোক না কেন, বেশ কয়েকবার ইনকাম করার চেষ্টা তোমাকে করতেই হবে।
২. MS Excel:
তুমি ইঞ্জিনিয়ারিং/মেডিকেল/কিংবা হিস্ট্রি যে সাবজেক্টেই পড়ো না কেন। বেসিক Excel তোমাকে শিখতেই হবে। কিভাবে excel এ যোগ করে, এভারেজ বের করে। চার্ট বানায়, ফর্মুলা এপ্লাই করে, ডাটা ফিল্টার করে, ফর্মুলা বাদে ভ্যালু কপি-পেস্ট করে। একাধিক ওয়ার্কশীট থেকে ডাটার সামারি করে। সেটা তোমাকে জানতেই হবে। জাস্ট এক সপ্তাহ সময় দাও। নিজের কম্পিউটারে এক্সেল না থাকলে, গুগল ড্রাইভের গুগল শিট (sheet) এ কিভাবে করে শিখে ফেল।
৩. ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট:
বন্ধুদের ঘুরতে যাওয়া হোক কিংবা ক্যাম্পসে কোন ইভেন্ট হোক- সেটা ইফতার পার্টি, বৈশাখী মেলা, rag পার্টি, জব ফেয়ার, এলামনাই রিউনিয়ন। যেটাই হোক তোমাকে ইভেন্টের একজন মেইন অর্গানাইজার হতেই হবে। তাহলে তুমি বুঝতে পারবে কিভাবে বিভিন্ন ধরনের মানুষ হ্যাডেল করতে হয়। কিভাবে বাজেট করতে হয়। প্লানিং করতে হয়। মানুষের কাজ থেকে হেল্প আদায় করতে হয়। ১৫-২০ টা জিনিস একসাথে কম্বাইন করার প্রাকটিক্যাল ট্রেনিং ফ্রি ফ্রি আর কোথাও পাবা না।
৪. বেসিক ইংলিশ:
তুমি দেশের সেরা ভার্সিটি বা সবচেয়ে খারাপ কলেজের ডিগ্রি কোর্স পড়ো না কেন। ইংরেজি নরমাল কথা বার্তা চালিয়ে যাওয়ার যোগ্যতা অর্জন করতেই হবে। কোন একটা ইংরেজি পত্রিকা ধরে সেখানে কি নিয়ে নিউজ করছে সেটা বুঝার যোগ্যতা অর্জন করতেই হবে। নিজের সম্পর্কে বা দেশের সম্পর্কে এক বসায় দুই তিন পাতা ইংরেজিতে লেখার যোগ্যতা তৈরি করতে হবে। ইংরেজি শিখার জন্য ইউটিউবে প্রচুর ভিডিও আছে। ২ মাস ইংরেজি ভিডিও দেখে দেখে রুম বন্ধ করে ওদের কথার সাথে নিজে নিজে উচ্চারণ প্রাকটিস কর। দেখো তোমার ইংরেজি লেভেল কই থেকে কই চলে গেছে।
৫. এরিয়া অফ ইন্টারেস্ট:
তুমি যে সাবজেক্টেই পড়ো না কোন। যে ফিল্ডেই পড়ো না কেন। তোমাকে সেই ফিল্ডের যেকোন একটা এরিয়াতে তোমার টেক্সট বইয়ের/ ক্লাসের পড়ার বাইরে বেশি জানতে হবে। সেটার জন্য তুমি এক্সট্রা বই পড়তে পারো। গুগলে সার্চ দিয়ে আর্টিকেল বের করে পড়তে পারো। সেই ফিল্ডের ব্লগ বা রিসার্চ পেপার থাকলে সেগুলা জানতে হবে। নিজের ভিতরে কিউরিসিটি গ্রো করতেই হবে।
তারপর যা যা শিখছো সেগুলা একটা একটা করে সামারি লিখতে হবে। সেই সামারি কোথাও না কোথাও পাবলিশ করার চেষ্টা করবা। ডিপার্টমেন্টের ম্যাগাজিন। সেটাও না পারলে বিশ্বের সেরা পাবলিশার ফেইসবুকে পাবলিশ করে দিবা। দুই একজন বন্ধু টিটকারি মারলেও তুমি কী কী শিখছো সেটা ফেইসবুকে পোস্ট করে দিবা।
৬. বেস্ট ফ্রেন্ড:
তোমার একজন বেস্ট ফ্রেন্ড বানাতেই হবে। একটা ফ্রেন্ড সার্কেল থাকবে। তবে ফ্রেন্ড সার্কেলের মধ্যে বা বাইরে তোমার একজন বেস্ট ফ্রেন্ড থাকবেই। যার সাথে মিলে তুমি অনেক কিছু করবে। অনেক জায়গায় যাবে। দুজনের ইন্টারেস্ট লেভেল কাছাকাছি থাকবে। একজন আরেকজনকে হেল্প করবে। এই ক্লোজনেস তোমাকে ডাউন টাইমে হেল্প করবে। ফিউচার ঠিক করতে হেল্প করবে। কারণ সব বন্ধুর সাথে সব শেয়ার করা যায় না। বেস্ট বাডি না থাকলে- ইয়াং লাইফে নিজের ভিতরের ইমোশনাল অত্যাচারটা বড্ড রকমের বেশি হবে।
৭. নেটওয়ার্কিং:
তুমি যে ফিল্ডে কাজ করতে চাও। সেই ফিল্ডের কমপক্ষে দশজনের সাথে তোমার কানেকশন থাকতে হবে। তারা হতে পারে তোমার সিনিয়র। অন্য ভার্সিটির সিনিয়র বা অন্য কোথাও থেকে পাশ করা প্রফেশনাল হতে পারে। দেশের বাইরের কেউ হতে পারে। হয়তো কোন ওয়ার্কশপ বা সেমিনারে এ গিয়ে তাদের সাথে পরিচয় হইছে। তাদের সাথে তোমার যোগাযোগ থাকবে। তারা জানবে তুমি কোন কোন জিনিসে ভালো। তোমার প্যাশন কি। ফিউচার প্ল্যান নিয়ে তাদের সাথে ডিসকাস করবা। [ এ বিষয়ে বিস্তারিত লেখা আছে “জব পেতে কিভাবে নেটওয়ার্ক গড়বেন ” গতকালকের লেখাটা। ক্লাবের পেইজে দেয়া আছে।]
৮. বিল্ড ইউর রেজুমি:
চার বছর ভার্সিটি পড়ার পর যদি দেড় পাতা রেজুমি লেখার মেটেরিয়াল তোমার লাইফে না থাকে তাইলে তুমি করলা, নাবিলা? তোমাকে এক্সট্রা কারিকুলার এর সাথে জড়িত থাকতেই হবে। যেকোন একটা অর্গানাইজেশনের সাথে। সেরকম কোন অর্গানাইজেশন না থাকলে তুমি এবং তোমার বন্ধুরা মিলে একটা দিয়ে ফেলবে। সিনিয়র ভাইদের কাছ থেকে তাদের সিভি/রেজুমি জোগাড় করে ফেলবা।
দরকার না থাকলেও সেকেন্ড ইয়ারে/থার্ড ইয়ারে তোমার একটা রেজুমি বানিয়ে ফেলবে। bdjobs এ গিয়ে দুই একটা জব সার্কুলার দেখে ঠিক করবে তারা কী কী চায়। তাহলে বুঝতে পারবে কোন কোন জায়গায় গ্যাপ আছে। তখন সেই গ্যাপগুলার এরিয়াতে ইমপ্রুভ করে ফেলবে।
৯. MS Word/Powerpoint:
তুমি যেই লাইনেই পড়ো কেন। MS word এ কিভাবে রিপোর্ট ফরম্যাট দিতে হয় , অটোমেটিক টেবিল অফ কন্টেন্ট কিভাবে বানাতে হয়। ট্রেকিং চেইঞ্জ, রেফারেন্স এড করার বিষয়গুলো জানতে হবে। একইসাথে ভালো পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন বানানোর চেষ্টা করবে। তোমার ক্লাসে প্রেজেন্টেশন না থাকলে নিজেই নিজের জন্য বানিয়ে ফেলবে। how to make good powepoint presentation লিখে গুগলে সার্চ দিয়ে শিখার জন্য চেষ্টা করতে হবে।
১০. স্ট্রেজে উঠতে হবে:
স্টুডেন্ট লাইফে একবার না একবার তোমাকে স্টেজে উঠতেই হবে। মিনিমাম ৫০জন মানুষের সামনে। সেটা বক্তৃতা দিতে হোক। উপস্থাপনা দিতে হোক। বা নাচ, গান/নাটক কিছু পারফর্ম করতে হোক। তোমাকে পাবলিকের সামনে দাঁড়ানোর ভয় কাটানোর এর চেয়ে ভালো সুযোগ স্টুডেন্ট লাইফের বাইরে কোথাও পাবা না।
১১. এক্সটা নলেজ:
পাঠ্য বইয়ের বাইরের জগতে তোমাকে হানা দিতেই হবে। সেটা হতে পারে কিছু বিখ্যাত বই পড়ে (বাংলায় বা ইংরেজিতে)। উপন্যাস বা আত্ন উন্নয়নমূলক বা অন্য কোন ক্যাটাগরির বই। হতে পারে কিছু অস্কার বিজয়ী সিনেমা। মোস্ট পপুলার TED talks গুলা দেখলে। অন্য ডিপার্টমেন্টের ছেলেপুলেরা কী কী নিয়ে পড়তেছে সেটা নিয়ে মাঝে মধ্যে গল্প করলা।
তাইলে তুমি তোমার জগতের বাইরের কিছু জিনিস সম্পর্কে অবগত হলে। আর তার পাশাপাশি প্রোগ্রামিং ল্যাংগুজে কি জিনিস। কোন একটা প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ এর প্রাথমিক ধারণাগুলো নিয়ে রাখতে হবে।
১২) ব্যক্তিগত প্রিপারেশন:
তোমার একটা ব্যাংক একাউন্ট থাকতে হবে। টিউশনি করে হোক বা যেভাবেই হোক পাশ করার পর তিন-চার মাস চলার মতো টাকা তোমার ব্যাংকে থাকতে হবে। কারণ পাশ করার পরের দিনই সবাই চাকরি পেয়ে যাবে না। তোমাকে দুই জোড়া ফর্মাল ড্রেস কিনে রাখতে হবে। ইন্টারভিউ দিতে যাওয়ার সময় কাজে লাগবে।
মনে রাখবে- তোমার নিজেকেই নিজে গড়ে নিতে হবে। তোমার ভার্সিটি তোমাকে গড়ে দিবে না। শুধু একটা প্লাটফর্ম দিবে। সেই প্লাটফর্ম কাজে লাগানোর দায়িত্ব তোমার।
এই চেকলিস্ট ধরে ধরে এখন চেক করো- ১২ টা পয়েন্টের কোন কোন জায়গায় তোমার ঘাটতি আছে। সেগুলা ঠিক করার জন্য আজকে থেকেই কাজে নেমে পড়ো। তাহলে ছয় মাস বা এক বছর পরের তুমি, আজকের তুমির চাইতে অনেক বেশি আত্মপ্রত্যয়ী এবং যোগ্য হবে। সেটা দেখার অপেক্ষায় থাকলাম। আর অবশ্যই তোমার বন্ধুদের লেখাটা পড়তে দাও ম্যানশান করে।
লিখেছেনঃ ঝংকার মাহবুব
EmoticonEmoticon