আমাদের নতুন ডিপ্লোমা ভাইয়েরা পলিটেকনিকে ভর্তি হয়েই ভাবেন যে, তিনি খুব দ্রুতই একজন ইঞ্জিনিয়ার হয়ে যাবেন। ১ বছর কাটতে না কাটতে চোখের উপর থেকে যেনো পর্দা সরে যায়। বুঝতে শুরু করেন যে তারা তাদের জীবননে কি ভুলটাই না করেছেন। আর যারা বুঝতে পারেন না তারা আসলে বুঝতে চান না। তাদের ভাবনা থাকে যেমন চলছে চলুক, ডিপ্লোমা শেষে তো নিশ্চিত চাকরি পাবোই।
আসলে এটি আমাদের ভ্রান্ত ধারণা যে ডিপ্লোমা করলেই চাকরী পাওয়া যায়। বাস্তবতা কিন্তু এমনটা আমাদের বলে না। প্রায় ৪০ ভাগেরও বেশি ডিপ্লোমাধারীরা কিন্তু এখোনো বেকার। কারণ একটাই তাদের ব্যবহারিক জ্ঞান নেই। তাই আপানাদের নিকট আগাম সতর্কবার্তা যে আপনারা আগে থেকেই সাবধান হয়ে যান, আর নিজের ক্যারিয়ার নিয়ে সচেতন হউন। ইন্টার্নির আগেই শিখে ফেলুন আপনার বিষয়ভিত্তিক প্রাক্টিক্যাল কাজ। তাহলে চাকুরি আর আপনার কাছে সোনার হরিণ হবে না, আর ঘরে বসে হতে হবে না বয়স্ক বাবা-মায়ের কষ্ট। ফার্স্ট ইয়ার ডোন্ট কেয়ার, এরূপ মনোভাব ঝেড়ে ফেলুন। দেখবেন আপনি ৫ম সেমিস্টার থেকেই উপার্জন করছেন। আমার অনেক বন্ধুরা কিন্তু ১ম বছর থেকেই অর্থ উপার্জন শুরু করেছিল। আর বাকিরা ২য় ও ৩য় বছর থেকে শুরু করেছিল। কারণ, তারা জানত তাদের সামনে এগিয়ে যেতে হবে।
চাকুরি বা টাকা উপার্জন অত সোজা না। এখন ইন্টারভিউ এ আপনার পয়েণ্টকে যতটা না ভেরিফাই করে, তার চেয়ে আপনি কি কি কাজ পারেন বা ব্যাবহারিক কাজ এর অভিজ্ঞতা কতটুকু সেটা যাচাই করা হয়। তাই আপনার নিজেকে তৈরী করতে আগেভাগেই নিজেকে চাকুরির যোগ্য করে তুলুন।
আপনাকে তাই করতে হবে—
১. ব্যবহারিক ক্লাস কখনো মিস করবেন না।
২. ব্যবহারিক বিষয়গুলো না বুঝলে এড়িয়ে যাবেন না, প্রয়োজনে শিক্ষকের সহায়তা নিন।
৩. আপনার পলিটেকনিকের, আপনার বিভাগের অধীনে ৩-৬ মাস পরপর কয়েকটা বেসিক ট্রেড কোর্স হয় সেগুলো অনেক অল্প টাকায় করানো হয়। এই কোর্সগুলো করবেন।
৪. আপনি সিনিয়র ইন্সট্রাক্টরদের সহায়তায় আপনার বিষয়ভিত্তিক কাজ কোথায় শিখবেন জেনে নিন।
৫. আপনার বিভাগের মেধাবী বড়ভাইদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখুন, তারা কি করছে তা জানুন এতে আপনার অভিজ্ঞতা বাড়বে।
৬. শিক্ষানবিশ পার্ট-টাইম জব নিন আপনার বিষয়ে। মেকানিক্যাল হলে—ম্যাকানিকাল শপে, কম্পিউটার হলে কোন কম্পিউটার ফার্মে, ইলেক্ট্রিক্যাল হলে ইলেক্ট্রিক শপে, ইলেক্ট্রনিক্স হলে ইলেক্ট্রনিক্স সার্ভিস সেন্টারে, ফুড ও ক্যামিক্যাল হলে আপনি বিভিন্ন কনজ্যুমার বা ক্যামিক্যাল কম্পানিতে, সিভিল হলে বিভিন্ন ট্রেনিং সেন্টারে গিয়ে অটোক্যাড বা ৩ডি স্টুডিও এর কাজ শিখুন, এভাবে নিজের কাজের স্থল নির্বাচন করে শিখতে থাকুন। তাহলে আপনার ভবিষ্যত হবে উজ্জল।
সার্টিফিকেট এ ভালো পয়েন্ট পাবার ব্যবস্থাঃ
১. শিক্ষকদের সাথে ভালো ব্যবহার করুন, কারণ তাদের হাতেই অনেক প্র্যাক্টিক্যাল মার্কস থাকে।
২. প্রয়োজনে প্রাইভেট পড়ুন, ভালোভাবে শিখতে পারবেন ও শিক্ষকও আপনার অনেক সহায়তা করবেন।
৩. স্যারদের সামনে নিজেকে ফোকাস করুন, স্যাররা আপনাকে আরো বেশি স্মরণ রাখবে।
৪. বিভিন্ন প্রতিযোগীতায় পারুন আর না পারুন অংশগ্রহন করুন, এতে আপনি সবার নজরে আসবেন।
EmoticonEmoticon