একে অপরের সাথে বন্ধুত্ব গড়ে উঠবে এটাই স্বাভাবিক। প্রেম ভালোবাসার মধ্যে দিয়ে বন্ধুত্ব দীর্ঘস্থায়ী হবে। কিন্তু এ কেমন প্রেম দুই কিশোরীর মধ্যে যে একে অপরকে ছাড়া থাকতে পারবে না। মরলে এক সঙ্গে আর বাচলেও এক সঙ্গে। এমনকি বিয়ে করে স্বামীর সংসারও করবে না। ঠিক এমনই ঘটনা ঘটেছে চিতলমারীতে দুই কিশোরীর মধ্যে। গৌরী ও খাদিজা দুজনই সমবয়সী। পাশাপাশি বাড়ি হওয়ায় একে অপরের কাছে আসা-যাওয়া দীর্ঘদিন ধরে। এলাকাবাসী জানতো তারা দুই জন শুধুই বান্ধবী। কিন্তু দুই জনের প্রেম ভিন্ন মাত্রায় হওয়ায় দুশ্চিন্তায় পড়েছে দুই কিশোরীর পরিবার। গভীর সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছে তারা।
এক মুহূর্ত জন্য একজন আরেকজনকে ছেড়ে দুরে যেতে রাজি নয়। শত চেষ্টায়ও কোনোভাবে আলাদা করা যাচ্ছে না তাদের। দুই কিশোরী বলেন, বাঁচলে এক সঙ্গে মরলেও এক সঙ্গে মরবো। এ দুই কিশোরীর প্রেমের বিরল কাহিনী এলাকায় ব্যাপকভাবে আলোচনা সমলোচনা রয়েছে। একটি মেয়ের সাথে আরেকটি মেয়ের গভীর প্রেম। কি সম্পর্ক রয়েছে তাদের মধ্যে এমনই প্রশ্ন এলাকার এখন সবার মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে। আর এই বিরল প্রেমের ঘটনা বাগেরহাটের
গ্রামে ঘটেছে।
গ্রামে ঘটেছে।
এলাকাবাসী ও এ দুই কিশোরীর পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার কুড়ালতলা গ্রামের বালক বাড়ৈর কন্যা গৌরী বাড়ৈর সঙ্গে প্রতিবেশী সালাউদ্দিনের কন্যা খাদিজা আক্তারের বান্ধবী সম্পর্ক গড়ে ওঠে। দীর্ঘদিন ধরে একে অপরের বাড়িতে আসা-যাওয়া মাধ্যমে বন্ধুত্ব সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি তখন স্বাভাবিকভাবে নেয় দুই পরিবারের লোকজন। কিন্তু তাদের এ সম্পর্ক এক পর্যায় ভিন্ন রূপ নেবে তা কখনো ভাবেনি দুই পরিবার। গভীর সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে তারা। এলাকাবাসী ও দুই পরিবারকে অবাক করে দিয়ে তারা দু’জনে বাড়ি থেকে উধাও হয়ে যায়। পরিবারের লোকজন শত চেষ্টায়ও কোনোভাবে ফেরাতে পারছে না তাদের।
এ পরিস্থিতিতে মহাবিপাকে পড়েছে পরিবার দুটি। গৌরী ও খাদিজা দুই পরিবারের কাছে দাবি করে বলেন, সারা জীবন আমরা একসঙ্গে বসবাস করতে চাই। দুই জন দুজনকে খুব ভালোবাসে বলে জানায় তারা। বাকি জীবনও একসঙ্গে কাটাতে চায় দুজনে। এমনকি বিয়ে করে স্বামীর সংসার করতেও রাজি নয় তারা। গৌরীর পিতা বালক বাড়ৈ ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, এমন মেয়ে যেন আর কারো না হয়। তার মেয়েকে ফেরানোর জন্য মাসখানেক আগে তাকে ভালো পাত্র দেখে বিয়ে দেয়া হয়েছে। কিন্তু সে স্বামীর ঘরে না গিয়ে খাদিজার কাছে ঢাকায় গিয়ে উঠেছে। সেখান থেকে অনেক কৌশলে তাকে বাড়ি ফিরিয়ে আনা হলেও সে আর স্বামীর ঘরে যেতে চাইছে না।
তাকে অনেক বুঝিয়েও খাদিজার কাছ থেকে ফেরানো যাচ্ছে না। মেয়েকে নিয়ে মহাদুশ্চিন্তায় আছেন। আবার সুযোগ পেলে সে পালিয়ে যাবে বলে সারাক্ষণ চোখে চোখে রাখতে হচ্ছে। এ ব্যাপারে খাদিজার মা ফাতেমা বেগম জানান, তার মেয়েকে গৌরীর কাছ থেকে আলাদা করার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছিল কিন্তু ফোনে যোগাযোগ করে গৌরী সেখানে তার কাছে গিয়ে ওঠে। মেয়েকে নিয়ে তারা পড়েছেন মাহাবিপদে এমনটি বলেছেন ফাতেমার মা। এই দুই কিশোরীকে নিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝিও হচ্ছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা মহিলা পরিষদের সভানেত্রী হেলানা পারভীন জানান, সাধারণত ছেলে-মেয়েদের মধ্যে প্রেম-ভালোবাসার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। কিন্তু এটা একটা ভিন্ন বিষয় বলে মনে হচ্ছে। গৌরী আর খাদিজার সম্পর্কটা আসলে কি আমরা এখনো বুঝতে পারছি না। তাদের পরিবারও বিষয়টি নিয়ে বিপাকে পড়েছে। খাদিজা জানায়, সে এখন গৌরীকে ছেড়ে থাকতে চেষ্টা করছে। কিন্তু গৌরী কোনো ভাবে তার পিছু ছাড়ছে না।।
সেয়ার করে অন্যকে জানার সুযোগ দিন
EmoticonEmoticon